নিরপেক্ষতার নীরিখে সুযোগের সদ্ব্যবহার

অমিত সম্ভাবনাময় আমাদের বাংলাদেশ অবশ্যই প্রকৃতির বিশেষ আশীর্বাদপুষ্ট। অথচ দেশটি ইপ্সিত উন্নয়নের পথে যেতে ইতিবাচকতার পরিবর্তে নানান নেতিবাচক আবহ সৃষ্টি হচ্ছে। মাথায় উত্তরের হিমালয় পর্বত এবং পদপ্রান্তে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর হওয়ায় কর্কটক্রান্তি রেখায় অবস্থানকারী হয়ে দেশটি মরুভূমি না হয়ে নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার বদৌলতে সুজলা সুফলা। হাজার হাজার বছর বিদেশি শাসন শোষণের পর ১৯৭১ সালে ‘স্বাধীন আশায় পথ চলা’র অধিকার অর্জন করে বাংলাদেশের জনগণ। বিগত ৪৭ বছরে যতোগুলো সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় এসেছে তারা সমুদয় সাফল্যকে নিজেদের একক সাফল্য বলে প্রচারে মগ্ন থেকেছে। তাদের মনের মধ্যে সকল বয়ানের মধ্যে যেন ‘আমরাই’ সব। অন্য সবাই বিপক্ষ। আর যে বা যারা যখনই ক্ষমতাবান হয়েছে তারা দলীয় সাম্প্রদায়িকতা বা স্বৈরাচারী মনোভাবের শিকলে আটকা পড়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে (কতিপয় সুনির্দিষ্ট অভিযোগে অভিযুক্তরা ব্যতীত) দেশের সকল মানুষ অংশগ্রহণ করলেও পক্ষ-বিপক্ষ নাম দিয়ে নিজেদেরকে নিজেরাই বিভক্ত করে ‘আমরাই আমাদের শত্রু’ বনে যাচ্ছে যেন। এমন এক সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটেছে যে সবাই পারস্পরিক দোষারোপে সিদ্ধহস্ত-নিজের দোষত্রুটির দিকে তাকানোয় নিমরাজি। ক্ষমতাসীনেরা নিজের দোষ দেখতে পায় না- আর যতো দোষ যেন বিরোধী পক্ষের। মনে হবে সবাই বুদ্ধি প্রতিবন্ধীত্ব বরণ এবং দলীয় সাম্প্রদায়িকতার শিকার। আজ যিনি তার গৌরবময় ভূমিকার জন্য নমস্য তার কোনো একটা বেফাঁস মন্তব্যে মুহূর্তের মধ্যে তিনি আস্তকুঁড়ে নিমজ্জিত হতে পারেন। চরিত্র হনন এর এই প্রেক্ষাপটে আশংকা এই যে দিনবদলে সকলকেই এক সময় এ ধরনের হেনস্থার শিকার যে হতে হবে সেটা কারোরই কর্ণকুহরে মনে হচ্ছে যেন পৌঁছাচ্ছে না।